আপনার দুধ আপনি বেছে নিন: প্রাণিজ দুধের সুবিধা ও অসুবিধা কোন দুধ ভালো
বাংলাদেশের বার্ষিক দুধ উৎপাদন ২০২১-২২ সালে ১৩.০৭ মিলিয়ন মেট্রিক টনে পৌঁছেছে, যা ২০১২-১৩ সালের ৫.০৭ মিলিয়ন মেট্রিক টনের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বৃদ্ধি। এই প্রবৃদ্ধি দেশের দুধ উৎপাদনকে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশে দুধের চাহিদা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু অনেক মানুষ দুধের বিভিন্ন ধরনের এবং ব্যবহার সম্পর্কে সঠিকভাবে জানে না। সঠিক দুধ নির্বাচন এবং তার উপযুক্ত ব্যবহার সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যদিও দেশটি ৯১% স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে, তবুও দুধের চাহিদা পূরণে কিছু ঘাটতি রয়ে গেছে।
এই ঘাটতি পূরণের জন্য বিদেশ থেকে দুধের গুঁড়া আমদানি করা হয়, বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, ডেনমার্ক ও পোল্যান্ড থেকে। বাংলাদেশে নগর এলাকায় মাথাপিছু দৈনিক দুধের ব্যবহার ৩৮.৫ গ্রাম এবং গ্রামীণ এলাকায় ৩২.১ গ্রাম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশকৃত দৈনিক ২৫০ মিলিলিটার দুধের তুলনায় এটি অনেক কম। এই ব্যবহারের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হলে দুধের উৎপাদন ও সরবরাহ আরও বৃদ্ধি করতে হবে।
সঠিক দুধ নির্বাচন:এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে আপনি কিভাবে এবং কোন দুধ খাচ্ছেন। প্রতিটি দুধের প্রকারের পুষ্টিগুণ আলাদা, তাই আপনার শরীরের চাহিদা অনুযায়ী সঠিক দুধ নির্বাচন করা উচিত।
Choose Your Milk
পাস্তরিত দুধ হলো এমন এক ধরনের দুধ, যেটিকে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য উত্তপ্ত করে তারপর দ্রুত ঠান্ডা করা হয়। এর মাধ্যমে দুধে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও অন্যান্য জীবাণু ধ্বংস হয়ে যায়, কিন্তু দুধের পুষ্টিগুণ অনেকাংশেই অক্ষুণ্ন থাকে।
বিষয় | কাঁচা দুধ | পাস্তরিত দুধ |
---|---|---|
ব্যাকটেরিয়া | থেকে যেতে পারে | ধ্বংস হয় |
সংরক্ষণ | কম সময় টিকে | বেশি সময় টিকে |
স্বাস্থ্য ঝুঁকি | বেশি | কম |
স্বাদ | স্বাভাবিক | কিছুটা পরিবর্তিত |
পাস্তরিত স্ট্যান্ডার্ড দুধ হল এমন একটি দুধ, যার মধ্যে ফ্যাট বা চর্বির পরিমাণ নির্দিষ্ট মাত্রায় (সাধারণত ৪% থেকে ৪.৫%) রাখা হয়। এটি মূলত গাভীর দুধ, যা পাস্তরাইজেশনের মাধ্যমে জীবাণুমুক্ত করা হয় এবং পরে এতে ফ্যাটের ভারসাম্য তৈরি করা হয়। এর স্বাদ ঘন, পুষ্টিগুণ ভালো এবং এটি রান্না ও পানীয় তৈরিতে অত্যন্ত উপযোগী।
পুষ্টি উপাদান (প্রতি ১০০ মি.লি.):
উপাদান | পরিমাণ |
---|---|
এনার্জি (ক্যালরি) | ৭২ ক্যালরি |
ফ্যাট | ৪.৫ গ্রাম |
প্রোটিন | ৩.০ গ্রাম |
কার্বোহাইড্রেট | ৪.৭ গ্রাম |
ক্যালসিয়াম | ১২০ মি.গ্রা. |
টোনড দুধ হলো এমন এক ধরনের পাস্তরিত দুধ, যেখানে গাভী বা মহিষের পূর্ণ ফ্যাটযুক্ত দুধে স্কিমড মিল্ক এবং পানি মিশিয়ে চর্বির পরিমাণ কমানো হয়। এতে প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম ঠিকই থাকে, তবে ফ্যাট অনেকটাই হ্রাস পায়। এই দুধটি মূলত স্বাস্থ্যসচেতন, ডায়াবেটিক এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকা ব্যক্তিদের জন্য উপযুক্ত।
যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান যাদের হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপ আছে ডায়াবেটিক বা প্রিডায়াবেটিক রোগীরা শিশুরা ও স্কুল পড়ুয়া বাচ্চারা জিম করা বা শরীরচর্চায় নিয়োজিত তরুণ-তরুণীরা
দুধ একটি পরিপূর্ণ পুষ্টির উৎস। তবে বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের দুধ পাওয়া যায়, প্রতিটির বৈশিষ্ট্য ও উপকারিতা আলাদা। আপনি কী দুধ খাচ্ছেন, সেটি আপনার স্বাস্থ্য, বয়স, দৈনন্দিন রুটিন এবং পুষ্টির চাহিদার ওপর নির্ভর করে ঠিক করা উচিত।
দুধের ধরন | পুষ্টির মান | ফ্যাটের পরিমাণ | উপযোগী কার জন্য |
---|---|---|---|
পাস্তরিত দুধ | ১০০% | বেশি | শিশু, রোগী, গর্ভবতী নারী |
স্ট্যান্ডার্ড দুধ | ৭০% | মাঝারি | রান্নাবান্না, সাধারণ পরিবার |
টোনড দুধ | ৫০% | কম | ওজন সচেতন, ডায়াবেটিক |
Choose Your Milk Wisely
দুধ বেছে নেওয়ার আগে নিজের স্বাস্থ্য চাহিদা, জীবনধারা, ও ঝুঁকি বিবেচনা করুন। Choose Your Milk হতে পারে আপনার প্রতিদিনের পুষ্টির সঠিক ভিত্তি। সব দুধেই রয়েছে উপকার, শুধু জানতে হবে কোনটি আপনার শরীর ও প্রয়োজনের সঙ্গে বেশি মানানসই।
আপনি যদি দুধে ভিন্ন স্বাদ বা পুষ্টিগুণ চান, তাহলে এখনই নতুন কিছু ট্রাই করার সেরা সময়। ইন্সটাকার্ট-এর মতো অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সহজেই আপনার পছন্দের দুধ ঘরে বসেই পেয়ে যেতে পারেন।
👉 এখনই আপনার পছন্দের দুধ অর্ডার করুন এবং নিজেই খুঁজে নিন কোনটা আপনার জন্য সেরা!