বন্ধুরা, গরমে যখন লোডশেডিং হয়, তখন কারোরই ভালো লাগে না। বিশেষ করে গ্রামে বা ছোট শহরে এই সমস্যা আরো বেশি। অনেক সময় ঘরে বাতাসের জন্য একটা ফ্যান চালাতে পারলে বা মোবাইল চার্জ দিতে পারলে অনেক স্বস্তি পাওয়া যায়। কিন্তু বড় বড় সোলার প্যানেল বা আইপিএস (IPS) লাগানোর জন্য অনেকের কাছে যথেষ্ট টাকা থাকে না। তাই আজ আমি তোমাদের সাথে এমন একটা সহজ সমাধান শেয়ার করব, যেটা দিয়ে কম খরচে বিদ্যুৎ পাওয়া যায়। হ্যাঁ, আমি বলছি ৩০ ওয়াট সোলার প্যানেলের দাম কত নিয়ে। এই ছোট্ট প্যানেল দিয়ে তুমি তোমার দৈনন্দিন ছোটখাটো কাজ সহজেই চালিয়ে নিতে পারবে। চলো, এটা নিয়ে একটু বিস্তারিত জানি।
যেকারনে 30 ওয়াট সোলার প্যানেল বেছে নিবে
আমরা অনেকেই চাই বাড়িতে সোলার প্যানেল লাগাতে। কিন্তু বড় সোলার সিস্টেমের দাম শুনলে মাথা ঘুরে যায়। তবে 30 ওয়াট সোলার প্যানেল এমন একটা জিনিস, যেটা কম বাজেটে তোমার বাড়িতে লাগানো যায়। এই প্যানেল দিয়ে তুমি একটা ছোট ফ্যান চালাতে পারো, একটা লাইট জ্বালাতে পারো, এমনকি মোবাইল চার্জও দিতে পারো। যারা লোডশেডিং থেকে বাঁচতে চান, কিন্তু বেশি খরচ করতে পারেন না, তাদের জন্য এটা একটা দারুণ বিকল্প।
আমি দেখেছি, অনেকে ইন্টারনেটে এই প্যানেলের দাম আর এটা দিয়ে কী কী চালানো যায়, তা খুঁজে বেড়ায়। তাই আজ আমি চেষ্টা করব এই ছোট্ট প্যানেল সম্পর্কে সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তোমাদের সামনে তুলে ধরতে। এটা পড়লে তুমি নিজেই বুঝতে পারবে এটা তোমার জন্য কতটা কাজের।
৩০ ওয়াট সোলার প্যানেলের দাম কত বাংলাদেশে
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই প্যানেলের দাম কত? বাজারে ছোট থেকে বড়, এমনকি বাণিজ্যিক সোলার প্যানেলও পাওয়া যায়। কিন্তু আমরা যারা ছোট পরিবারে থাকি বা শুধু দৈনন্দিন ছোট কাজের জন্য সোলার চাই, তাদের জন্য 30 ওয়াট সোলার প্যানেলই যথেষ্ট। এটার দামও অনেক কম।
বর্তমান বাজারে প্রতি ওয়াট সোলার প্যানেলের দাম ৪৫ টাকা থেকে ৬০ টাকার মধ্যে থাকে। এখন হিসাবটা একটু সহজ করে দেখি। যদি প্রতি ওয়াট ৪৫ টাকা হয়, তাহলে ৩০ ওয়াটের দাম হবে ৪৫ x ৩০ = ১৩৫০ টাকা। আর যদি প্রতি ওয়াট ৬০ টাকা হয়, তাহলে দাম হবে ৬০ x ৩০ = ১৮০০ টাকা। তবে কোম্পানি বা দোকানের ওপর ভিত্তি করে এই দাম একটু কম-বেশি হতে পারে। সাধারণত ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকার মধ্যে এই প্যানেল পাওয়া যায়।
তোমার কাছাকাছি যে কোনো ইলেকট্রনিক্স দোকানে গেলেই এটা পেয়ে যাবে। তবে আমি বলব, কেনার আগে দোকানদারের সাথে ভালো করে দরদাম করে নিও। আর হ্যাঁ, ভালো মানের প্যানেল কিনতে চেষ্টা করবে, যাতে বেশিদিন টিকে।
এবার আসি আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে। অনেকে ভাবে, এই প্যানেল দিয়ে কতটা চার্জ পাওয়া যাবে? বা কত ভোল্টের ব্যাটারি লাগবে? এই প্রশ্নগুলো খুবই স্বাভাবিক। কারণ, প্যানেল কেনার আগে এসব জানা জরুরি।
30 ওয়াট সোলার প্যানেল খুব বেশি শক্তিশালী না। তাই এটার সাথে সর্বোচ্চ ১২ ভোল্টের ব্যাটারি ব্যবহার করা যায়। এই প্যানেল থেকে প্রতি ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ এম্পিয়ার কারেন্ট পাওয়া যায়। এখন এই কারেন্ট দিয়ে ব্যাটারি চার্জ করতে হলে ব্যাটারির ক্ষমতাও কম হতে হবে। সাধারণত ৩০ থেকে ৪০ এম্পিয়ারের ব্যাটারি এই প্যানেলের জন্য ঠিক আছে।
ধরো, তুমি একটা ৩০ এম্পিয়ারের ব্যাটারি লাগালে। এই প্যানেল দিয়ে সূর্যের আলো ভালো থাকলে ৫-৬ ঘণ্টায় ব্যাটারি পুরো চার্জ হয়ে যাবে। তারপর সেই চার্জ দিয়ে তুমি রাতে ফ্যান বা লাইট চালাতে পারবে। তবে মনে রাখতে হবে, এটা বড় কোনো যন্ত্রপাতি চালানোর জন্য না।
30 ওয়াট সোলার প্যানেল দিয়ে কী কী চালানো যায়
এখন অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে, এই ছোট প্যানেল দিয়ে আসলে কী কী চালানো সম্ভব? আমি আগেই বলেছি, এটা দিয়ে বড় কিছু চালানো যাবে না। তবে দৈনন্দিন ছোটখাটো কাজের জন্য এটা দারুণ কাজে লাগে। চলো, একটু তালিকা করে দেখি:
- মোবাইল চার্জ: এই প্যানেল দিয়ে তুমি সহজেই মোবাইল চার্জ করতে পারবে। একটা ছোট চার্জ কন্ট্রোলার লাগালে আরো ভালো হবে।
- ডিসি ফ্যান: একটা ছোট সাইজের DC ফ্যান চালাতে পারবে, যেটা গরমে অনেক আরাম দেবে।
- ডিসি লাইট: একটা DC লাইট জ্বালাতে পারবে, যেটা রাতে ঘর আলো করতে কাজে আসবে।
- ছোট ডিসি মোটর: যদি কোনো ছোট মোটর চালানোর দরকার হয়, সেটাও সম্ভব।
তবে এখানে একটা কথা মনে রাখতে হবে। এই প্যানেল দিয়ে এসি (AC) যন্ত্রপাতি চালানো যাবে না। তার জন্য ইনভার্টার লাগবে, আর সেটা হলে খরচ বেড়ে যাবে। তাই শুধু DC যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে হবে।
সোলার প্যানেল কেনার সময় কিছু জিনিস মাথায় রাখা জরুরি। প্রথমত, ভালো মানের প্যানেল কিনতে হবে। বাজারে অনেক কোম্পানির প্যানেল পাওয়া যায়, কিন্তু সবগুলো ভালো না। তাই বিশ্বস্ত দোকান থেকে কিনবে। দ্বিতীয়ত, প্যানেলের সাথে একটা চার্জ কন্ট্রোলার কিনে নিলে ব্যাটারি বেশি দিন টিকবে। আরেকটা জিনিস, কেনার আগে প্যানেলটা ভালো করে দেখে নিও, কোথাও ভাঙা বা খারাপ আছে কি না।
আমি আরেকটা পরামর্শ দেব। যদি সম্ভব হয়, প্যানেলের সাথে একটা ছোট ব্যাটারি আর কয়েকটা DC যন্ত্রপাতি একসাথে কিনে ফেলো। তাহলে পুরো সিস্টেমটা একবারে তৈরি হয়ে যাবে।
আপনার জন্য–
- আকাশ টিভি প্যাকেজ।
- বাংলাদেশে আজকে ধান কাটার মেশিনের দাম কেমন।
- রহিমা আফরোজ সোলার ব্যাটারির দাম।
- RFL Geyser price in Bangladesh তালিকা।
- ড্রোন ক্যামেরা দাম কত বাংলাদেশ।
শেষ কথা
বন্ধুরা, আজ আমি চেষ্টা করেছি 30 ওয়াট সোলার প্যানেল নিয়ে তোমাদের সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেওয়ার। এর দাম, এটা কত চার্জ দেয়, আর কী কী চালানো যায় সবকিছুই বলার চেষ্টা করেছি। এখন সিদ্ধান্ত তোমার। যদি ভাবো, এটা তোমার কাজে লাগবে, তাহলে আর দেরি না করে কিনে ফেলো।
আমার মনে হয়, এই ছোট্ট প্যানেলটা অনেকের জীবনকে একটু সহজ করে দিতে পারে। তুমি যদি এটা ব্যবহার করে দেখো, তাহলে তোমার অভিজ্ঞতাটা আমার সাথে শেয়ার করো। আমি জানতে চাই, এটা তোমার কতটা কাজে এসেছে। তাহলে আজ এখানেই শেষ করছি।