কেন্দ্রীয় সরকার পাসপোর্ট আবেদনের নিয়মে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে। ২০২৫ সালের পাসপোর্ট নিয়মাবলী অনুযায়ী, এখন থেকে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে জন্ম শংসাপত্র বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই নতুন নিয়ম ২০২৩ সালের ১লা অক্টোবরের পরে জন্ম নেওয়া সমস্ত নাগরিকদের জন্য প্রযোজ্য হবে। আগে জন্মের প্রমাণপত্র হিসেবে বিভিন্ন ডকুমেন্ট জমা দেওয়া গেলেও এখন শুধুমাত্র মিউনিসিপাল কর্পোরেশন বা অন্য স্বীকৃত কর্তৃপক্ষের দেওয়া জন্ম সার্টিফিকেটই গ্রহণযোগ্য হবে।
পাসপোর্ট আবেদনে নতুন নিয়ম 2025
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ১লা অক্টোবর, ২০২৩-এর পরে জন্ম নেওয়া ব্যক্তিদের পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে জন্ম শংসাপত্র জমা দিতে হবে। এই শংসাপত্র রেজিস্টার অফ বার্থ এন্ড ডেথ বা মিউনিসিপাল কর্পোরেশন থেকে ইস্যু করা হতে হবে। আগে জন্মের প্রমাণপত্র হিসেবে স্কুল ট্রান্সফার সার্টিফিকেট, প্যান কার্ড, ভোটার কার্ড বা ড্রাইভিং লাইসেন্স জমা দেওয়া গেলেও এখন শুধুমাত্র জন্ম সার্টিফিকেটই গ্রহণযোগ্য হবে।
তবে, ২০২৩ সালের অক্টোবরের আগে জন্ম নেওয়া ব্যক্তিদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তারা জন্মের প্রমাণপত্র হিসেবে স্কুল ট্রান্সফার সার্টিফিকেট, প্যান কার্ড, সরকারি কর্মীদের সার্ভিস রেকর্ডের কপি, ভোটার কার্ড বা ড্রাইভিং লাইসেন্স জমা দিতে পারবে।
পাসপোর্টে কেন এই পরিবর্তন আনা হয়েছে
কেন্দ্রীয় সরকারের মতে, জন্ম শংসাপত্র বাধ্যতামূলক করার মূল উদ্দেশ্য হলো জালিয়াতি রোধ করা এবং নাগরিকদের সঠিক তথ্য সংরক্ষণ করা। আগে বিভিন্ন ডকুমেন্টকে জন্মের প্রমাণপত্র হিসেবে গ্রহণ করা হতো। এতে জালিয়াতির সুযোগ বেশি ছিল। এখন শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট ডকুমেন্ট গ্রহণ করলে জালিয়াতি কমবে এবং তথ্যের সঠিকতা বজায় থাকবে।
নতুন নিয়ম কখন কার্যকর হবে
এই নতুন নিয়ম ২০২৫ সালের পাসপোর্ট নিয়মাবলী অনুযায়ী কার্যকর হবে। তবে, ২০২৩ সালের ১লা অক্টোবরের পরে জন্ম নেওয়া ব্যক্তিদের জন্য এই নিয়ম এখন থেকেই প্রযোজ্য। অর্থাৎ, ২০২৩ সালের অক্টোবরের পরে জন্ম নেওয়া শিশুদের পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে হলে জন্ম সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে।
কী কী ডকুমেন্ট গ্রহণযোগ্য হবে জানুন
জন্ম তারিখ | গ্রহণযোগ্য ডকুমেন্ট |
---|---|
১লা অক্টোবর, ২০২৩-এর আগে | স্কুল ট্রান্সফার সার্টিফিকেট, প্যান কার্ড, ভোটার কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, সরকারি কর্মীদের সার্ভিস রেকর্ডের কপি |
১লা অক্টোবর, ২০২৩-এর পরে | শুধুমাত্র জন্ম সার্টিফিকেট (মিউনিসিপাল কর্পোরেশন বা রেজিস্টার অফ বার্থ এন্ড ডেথ থেকে ইস্যু করা) |
জন্ম সার্টিফিকেট কীভাবে সংগ্রহ করবেন
জন্ম সার্টিফিকেট সংগ্রহ করার প্রক্রিয়া খুবই সহজ। জন্মের পরেই শিশুর জন্ম শংসাপত্র সংগ্রহ করে রাখা উচিত। এটি সাধারণত হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে সংগ্রহ করা যায়। যদি জন্ম শংসাপত্র হারিয়ে যায় বা সংগ্রহ করা না হয়ে থাকে, তাহলে স্থানীয় মিউনিসিপাল কর্পোরেশন বা রেজিস্টার অফ বার্থ এন্ড ডেথ অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। সেখানে আবেদন করে নতুন জন্ম সার্টিফিকেট সংগ্রহ করা যাবে।
এই পরিবর্তনের সুবিধা কী
এই নতুন নিয়মের বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে:
- জালিয়াতি রোধ: শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট ডকুমেন্ট গ্রহণ করলে জালিয়াতির সুযোগ কমবে।
- তথ্যের সঠিকতা: জন্ম সার্টিফিকেটে জন্ম তারিখ, স্থান এবং অন্যান্য তথ্য সঠিকভাবে উল্লেখ থাকে।
- সরল প্রক্রিয়া: আগে বিভিন্ন ডকুমেন্ট জমা দিতে হতো। এখন শুধুমাত্র একটি ডকুমেন্ট জমা দিলেই হবে।
এই নিয়মের চ্যালেঞ্জ কী
এই নিয়মের কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে:
- জন্ম সার্টিফিকেট না থাকা: অনেকের জন্ম সার্টিফিকেট নেই বা হারিয়ে গেছে। তাদের জন্য নতুন করে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে সময় লাগবে।
- গ্রামীণ এলাকায় সচেতনতার অভাব: গ্রামীণ এলাকায় অনেকেই জন্ম সার্টিফিকেটের গুরুত্ব বুঝেন না। তাদের জন্য এই নিয়ম মানা কঠিন হতে পারে।
কেন্দ্রীয় সরকার এই নতুন নিয়ম সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে। গ্রামীণ এলাকায় জন্ম সার্টিফিকেট সংগ্রহ করার জন্য বিশেষ ক্যাম্পের আয়োজন করা হচ্ছে। এছাড়া, অনলাইনে জন্ম সার্টিফিকেট আবেদনের সুবিধাও চালু করা হয়েছে।
নাগরিকদের করণীয়
এই নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবরের পরে জন্ম নেওয়া ব্যক্তিদের এখন থেকেই জন্ম সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে রাখা উচিত। যাদের জন্ম সার্টিফিকেট নেই বা হারিয়ে গেছে, তারা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে নতুন সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে পারেন।
পাসপোর্ট আবেদনের নিয়মে এই পরিবর্তন নাগরিকদের জন্য একটি বড় পরিবর্তন বয়ে এনেছে। জন্ম শংসাপত্র বাধ্যতামূলক করার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার জালিয়াতি রোধ এবং তথ্যের সঠিকতা নিশ্চিত করতে চাইছে। তবে, এই নিয়ম সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য নাগরিকদের সচেতনতা এবং সরকারের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সবাইকে এখন থেকেই জন্ম সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এটি ভবিষ্যতে পাসপোর্ট আবেদনের প্রক্রিয়াকে সহজ এবং দ্রুত করবে।