Saturday, April 19, 2025
Homeশিক্ষাআবার আসিব ফিরে ধানসিড়িটির তীরে - সারমর্ম

আবার আসিব ফিরে ধানসিড়িটির তীরে – সারমর্ম

Aabar Asibo Phire: আবার আসিব ফিরে ধানসিড়িটির তীরে – জীবনানন্দ দাশের “আবার আসিব ফিরে” কবিতায় কবি তাঁর প্রিয় বাংলার প্রকৃতির প্রতি অটুট ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন। তিনি বাংলার মাঠ-নদী, প্রকৃতি এবং জীবজগতের সঙ্গে পুনর্জন্মের মাধ্যমে একাত্ম হতে চান। কবিতায় কবি শঙ্খচিল, শালিখ বা হাঁসের রূপে ফিরে এসে প্রকৃতির সৌন্দর্যে মগ্ন থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। বাংলার কুয়াশা, কিশোরীর হাসি, এবং সন্ধ্যার রূপ-গন্ধের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তিনি চিরকাল বাংলার সৌন্দর্য অনুভব করতে চান। এই কবিতা কবির জন্মান্তরের আকাঙ্ক্ষা ও বাংলা প্রকৃতির প্রতি গভীর প্রেমের প্রতিচ্ছবি। এটি প্রকৃতির সঙ্গে আত্মিক সংযোগের এক অমর সৃষ্টি।

Aabar Asibo Phire: আবার আসিব ফিরে ধানসিড়িটির তীরে

আবার আসিব ফিরে ধানসিড়িটির তীরে-এই বাংলায়
আবার আসিব ফিরে ধানসিড়িটির তীরে-এই বাংলায়
হয়তো মানুষ নয়- হয়তো বা শঙ্খচিল শালিখের বেশে;
হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে
কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব এ কাঁঠাল-ছায়ায়;
হয়তো বা হাঁস হ’বো-কিশোরীর-ঘুঙুর রহিবে লাল পায়,
সারা দিন কেটে যাবে কলমীর গন্ধ ভরা জলে ভেসে ভেসে;
আবার আসিব আমি বাংলার নদী মাঠ ক্ষেত ভালোবেসে
জলঙ্গীর ঢেউয়ে ভেজা বাংলার এ সবুজ করুণ ডাঙায়;

হয়তো দেখিবে চেয়ে সুদর্শন উড়িতেছে সন্ধ্যার বাতাসে;
হয়তো শুনিবে এক লক্ষমীপেঁচা ডাকিতেছে শিমুলের ডালে;
হয়তো খইয়ের ধান ছড়াতেছে শিশু এক উঠানের ঘাসে;
রূপসার ঘোলা জলে হয়তো কিশোর এক শাদা ছোঁড়া পালে
ডিঙা বায়,-রাঙা মেঘ সাঁতরায়ে অন্ধকারে আসিতেছে নীড়ে
দেখিবে ধবল বক; আমারেই পাবে তুমি ইহাদের ভিড়ে- কবিতা তথা সনেট এর সারমর্ম।

‘আবার আসিব ফিরে ধানসিড়িটির তীরে এই বাংলায়’ কবিতাটি জীবনানন্দের “রূপসী বাংলা” কাব্যগ্রন্থের ১৪ নং সনেট কবিতা। এই কবিতাটিতে কবি জীবনানন্দ তাঁর বাংলা প্রকৃতির প্রতি চিরকাল ভালোবাসা যে অটুট থাকবে, এবং কোনমতেই যে তা তিনি ছিন্ন হতে দেবেন না সে কথা অকপটে ব্যক্ত করেছেন কবিতাটির শুরুতে জন্মজন্মান্তরের পথ ধরে ইহজীবন ত্যাগের পরও পুনর্জন্মের আকাগুফার ইচ্ছা ব্যক্ত করে-

আবার আসিব ফিরে ধানসিড়িটির তীরে এই বাংলায়

পুনর্জন্মের আকাঙ্ক্ষার ইচ্ছা ব্যক্ত করেই কিন্তু তিনি ক্ষান্ত থাকেননি। তাঁর অকপট ভালোবাসার প্রগাঢ়ভাব যে কত বাংলা প্রকৃতির সঙ্গে মগ্ন ও ধ্যানী তা বোঝানোর জন্য বাংলা প্রকৃতির সৌন্দর্যময়ী মুখের ঐশ্বর্যের প্রতি তাঁর অন্তরের নিবিড় চিরন্তন ভালোবাসার প্রেমের মূর্তিটি তুলে ধরার জন্য দ্বিধা করেননি আমাদের দীপ্ত-আবেগঘন কণ্ঠে এ কথা বলতে-

হয়তো মানুষ নয়-হয়তো বা শঙ্খচিল শালিখের বেশে; হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব এ কাঁঠাল-ছায়ায়;

হয়তো বা হাঁস হ’বো-কিশোরীর-ঘুঙুর রহিবে লাল পায়,

সারা দিন কেটে যাবে কল্ল্পীর গন্ধ ভরা জলে ভেসে ভেসে।

সারমর্ম – আবার আসিব ফিরে

মানুষ না হয়ে জন্মালেও তিনি যে ফিরে আসবেন বাংলা-প্রকৃতির কাছে সৌন্দর্যমন্থনের প্রত্যাশায় তা অকপটে ব্যক্ত করেছেন শালিখ বা শঙ্খচিল, কিংবা হাঁস ও লক্ষ্মীপেঁচা হয়ে পুনর্জন্মলাভের ঘোষণায়। এ ঘোষণার মধ্যে যে সত্যটি ফুটে উঠেছে তা হলো বাংলা প্রকৃতির প্রতি তাঁর মনের চিরন্তন অটুট মগ্ন-ধ্যানী ভালোবাসার। কেননা জীবজগতের শ্রেষ্ঠজীব মানুষ না হলেও যে তিনি ফিরবেন তাঁর বাংলাদেশের প্রিয় কোনো পাখির রূপ নিয়ে-এ কথাগুলির মধ্য দিয়েই তিনি তা আমাদের কাছে পরিস্কার করে দিয়েছেন। শালিখ বা শঙ্খচিল, কিংবা হাঁস ও লক্ষ্মীপেঁচা হয়ে পুনর্জন্মের মধ্যে তাঁর অন্তরের কোনো দীনতাতো প্রকাশ পাইনি, উল্টে যেটি প্রকাশ পেয়েছে তা হলো তাঁর অন্তরের এক অনাবিল তৃপ্ততা।

যা সুখেরই নামান্তর। এ সুখ বা তৃপ্ততা যাই বলি না কেন-তা-তো আসলে কবি-অন্তরের সুপ্ত সেই ইস্তাহার, যার মধ্যে রয়েছে আলোর স্বর্ণালী-অক্ষরে লেখা বাংলা প্রকৃতির প্রতি তাঁর কবি- অন্তরের চিরন্তন অটুট মগ্ন-ধ্যানী ভালোবাসার। তাঁর এ ভালোবাসা তিনি যে অন্তরে চিরবসন্তের মতন লালন করতে চান তা তিনি ব্যক্ত করেছেন এক-একটি প্রিয় পাখির রূপ ধরে জন্মাজন্মান্তর ধরে বাংলার প্রকৃতি ছেনে-ছেনে তার স্বাদ-গন্ধ-বর্ণ মেখে। এমনকি, ভোরের কাক হয়ে কার্তিকের নবাসের সময় আগমনের মধ্যে রয়েছে কবি-অন্তরের বাংলা প্রকৃতির উৎসবের প্রতি এক গভীর চিরন্তন প্রেম ও একইসঙ্গে বাংলা প্রকৃতির উৎসবের অংশীদার হয়ে নিজেকে তৃপ্ত ও সুখী করার এক প্রবল আকাঙ্ক্ষা।

সারমর্মের বাকি অংশ

আবার কল্ল্পীর গন্ধ ভরা জলে হাঁস হয়ে ভেসে বেড়ানোর মধ্যে রয়েছে এক চিরসুন্দরের সঙ্গে খেলা করার এক ইচ্ছা। এসবই এক রকম বাংলা প্রকৃতির স্বাদ-গন্ধ-বর্ণের সঙ্গে এক আর্থীকরণের কামনা নয় কী? বলতে তাই দ্বিধা নেই, কবি এ সব আকাগুঙ্ক্ষা ও ইচ্ছার ভেতর দিয়ে আসলে তাঁর বাংলা প্রকৃতির প্রতি তাঁর চিরন্তন প্রেমের শাশ্বত রূপটিকেই আমাদের সামনে তুলে ধরে বলতে চেয়েছেন, প্রেমের অমল আনন্দ ছড়িয়ে রয়েছে উজার হয়ে বাংলা প্রকৃতির কাঁঠাল-ছায়া থেকে কল্পীর গন্ধ-ভরা জল সর্বত্রে। যার প্রকৃত স্বাদ-গন্ধ-বর্ণ মেখে মেখে নিজেকে রাঙিয়ে নিতে হলে এক মানুষজন্মে সম্ভব নয়, প্রয়োজন বহু জন্মের। সে জন্ম মানুষ না হয়ে, শঙ্খচিল ও শালিখ, কাক বা হাঁস এবং লক্ষ্মীপেঁচা হলেও ক্ষতি নেই।

প্রথম পংক্তির পুণ উচ্চারণে যখন কবি এই সনেট কবিতাটির অষ্টকের শেষ দুটি পংক্তিতে আমাদের বলেন এ কথা-

হয়তো দেখিবে চেয়ে সুদর্শন উড়িতেছে সন্ধার বাতাসে;

হয়তো শুনিবে এক লক্ষ্মীপেঁচা ডাকিতেছে শিমুলের ডালে;

হয়তো খইয়ের ধান ছড়াতেছে শিশু এক উঠোনের ঘাসে।

রূপ-সার ঘোলা জলে হয়তো কিশোর এক শাদা ছেঁড়া পালে ডিডা বায়, রাঙা মেঘ সাঁতরায়ে অন্ধকারে আসিতেছে নীড়ে

দেখিবে ধবল বক; আমারেই পাবে তুমি ইহাদের ভিড়ে-

সন্ধ্যার বাতাসে সুন্দরের উপস্থিতি, শিমূলের ডালে লক্ষ্মীপেঁচার ডাক শোনার মধ্য দিয়ে কবি যেমন বাংলার প্রকৃতির স্নিগ্ধ-মধুর এক প্রেমময় সত্তার গভীরে জন্মান্তরের ভেতর দিয়ে পৌঁছতে পারবেন, তেমনি হয়তো তিনি ফের এভাবেও ফিরে আসতে পারেন বাংলার প্রকৃতির রূপ-গন্ধ-বর্ণের স্বাদ নিতে এক চঞ্চল শিশু বা কিশোর হয়ে। যে শিশু উঠোনের ঘাসে খই ছড়িয়ে খেলা করবে বাংলা প্রকৃতির সঙ্গে, কিংবা রূপসার ঘোলা জলে এক উদ্দাম প্রাণচঞ্চল কিশোর একখানা শাদা ছেঁড়া পাল টাঙিয়ে ডিঙা বেয়ে চলবে। এ খেলা, এ ডিঙি-বাওয়ার মধ্য দিয়ে যে সত্যস্বরূপটি তিনি এখানেই তুলে ধরতে চেয়েছেন তা হলো বাংলা প্রকৃতির কাছে এক চিরন্তন ভালোবাসার প্রীতি।

যা মুগ্ধতার রসে ভেজা এক চিরন্তন বাংলা প্রকৃতি প্রেমিকের! রঙিন মেঘ পার করে যখন অন্ধকার নেমে আসবে বাংলা প্রকৃতির মধ্যে, তখনও তাঁর বাংলা প্রকৃতির প্রেমসুধা যে অক্ষুণ্ণ থাকবে তাঁর হৃদয় ও মনে সে কথাও তিনি স্পষ্ট করে দেন ‘দেখিবে ধবল বক’ এ কথাগুলির মধ্য দিয়ে। এর পরেই যখন কবিতাটির সমাপ্তিতে কবি আমাদের এ কথা বলেন- ‘আমারেই পাবে তুমি ইহাদের ভিড়ে’ তখন স্পষ্ট হয়ে খুলে যায় তাঁর প্রেমিক মনের গোপন ইচ্ছার দরজাগুলি। আমাদের বুঝতে অসুবিধা হয় না বাংলা প্রকৃতির বুকে যে-কোনো জীব হয়েই জন্মান্তরের মধ্যে আনন্দ আছে, সুন্দরের যে চিরমুগ্ধতা আছে তা কম নয়: পাখি হোক, বা অর্বাচীন শিশু বা দামাল কিশোরই হোক!

এখানে কটি কথা বলা বোধকরি যুক্তিসঙ্গত হবে, কবি জীবনানন্দের মতোন এভাবে বাংলা প্রকৃতির প্রতি হৃদয়-উৎসারিত নিবিড় প্রেমবোধের পরিচয় আর কোনো কবি আমাদের কাছে তুলে ধরেননি। রবীন্দ্রনাথকে সামনে রেখেও বলতে বাধ্য হচ্ছি, জীবনানন্দের বাংলা প্রকৃতির প্রতি যে অটুট প্রেমবন্ধনের পরিচয় এই কবিতাটির মধ্যে লিপিবদ্ধ বা চিত্রার্পিত হয়েছে তা এক কথায় অভিনব এক ঈশ্বরপ্রেমিক। ধ্যানী বাউল মনের! যার মধ্যে রয়েছে সুন্দরের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে এক প্রেমময় রসে-ভেজার অপার আনন্দ।

সে আনন্দের মধ্যে রয়েছে একদিকে বিস্ময় ও শান্ত স্নিগ্ধতার এক নীরবতার নিশ্চিত আশ্রয়। যা তিনি জন্মজন্মান্তর ধরে পাবার আকাঙ্ক্ষা করেন হৃদয়ের একান্ত বাসনায়। বাংলা প্রকৃতির মধ্যে তাঁর এ ভাবনার প্রগাঢ়তাই তাঁকে এমন এক সচ্চিদানন্দলোকে পৌঁছে দেয় যেখানে শুধু গোটা পৃথিবী কেন, মহাবিশ্বই একাকার হয়ে যায়। তাই তিনি বার বার জন্মজন্মান্তর ধরে এক মুগ্ধতার আনন্দরসে ভিজে সঙ্গতির পথ ধরে বাংলা প্রকৃতির কাছে বার বার ফিরে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন কখনো শঙ্খচিল, শালিখ, কাক, লক্ষ্মীপেঁচা, হাঁস, ধবল বক হয়ে। এ আসলে বাংলা প্রকৃতির সৌন্দর্যময় সমষ্টির হাত ধরে পরমানন্দর গভীরে মিলেমিশে একাকার হয়ে থাকার বাসনা। কবিতাটির আসল সারসত্য এটিই।

এই সনেটটির গঠনে পেত্রার্কীয় হলেও রচিত শেক্সপীয়রীয় ধাঁচে। যদিও শেক্সপীয়রীয় যে রীতি স্তবক বিন্যাসে লক্ষ্য করা যায় তা এখানে মানা হয়নি। শেক্সপীয়রীয় সনেটের রীতিই হলো চার পংক্তির স্তবক তিনটি হবে, এবং শেষ স্তবকটি হবে দুই পংক্তির। এখানে জীবনানন্দ এ ক্রম মানেননি। কেবল অন্ত্যমিলে শেষ দুই পংক্তি করেছেন শেক্সপীয়রীয় ধাঁচে।

আর একটা কথা বলা এখানে উচিত হবে, একরকম কবি বাংলাদেশকে ভালোবাসার মধ্য দিয়ে এই কবিতাটিতে যে অপরূপ প্রেমকাহিনী আমাদের কাছে তুলে ধরেছেন তা আর এক বাংলাদেশের কবির কবিতায় পূর্বে লক্ষ্য করা গেছে। তিনি হলেন কবি মধুসূদন দত্ত। তাঁর চতুর্দশ পদী’ একটি কবিতায় (কপোতাক্ষ নদ, চতুর্দশপদী কবিতাবলী, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষং সংস্করণ)। সেই কবিতাটিতে মধুসূদন বঙ্গভূমির প্রতি অন্তরের গভীর ভালোবাসার কথা ব্যক্ত করেছেন।

রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষায় সিলেবাস, পরীক্ষা পদ্ধতিতে বদল!

শুধু পার্থক্য এই-মধুসূদনের বঙ্গভূমির প্রতি অন্তরের গভীর ভালোবাসার মধ্যে মিশে আছে একটা চরম হতাশা, অনুতাপ, আর অশ্রুসিক্ত ট্রাজিক দ্বন্দ্বের প্রতিচ্ছবি। কিন্তু জীবনানন্দের বাংলাদেশকে ভালোবাসার মধ্য দিয়ে যে অপরূপ প্রেমকাহিনীর চিত্ররূপ এই সনেট কবিতাটিতে ফুটে উঠেছে সেখানে হতাশা, অনুতাপ, আর অশ্রুসিক্ত ট্রাজিক দ্বন্দ্বের প্রতিচ্ছবির ছিটেফোঁটাতো নেই-ই, যেটি স্পষ্ট ফুটে উঠেছে তা হলো-বেদনা ও বিষণ্ণতার আবেশে এক চরম তৃপ্তির সুস্পষ্ট ছবি।

কাজেই, জীবনানন্দের রূপসী বাংলা যে তাঁর কাছে এক অন্য মাত্রা পেয়েছে, এবং তা এক প্রাণস্পন্দনের সঞ্জীবনী সুধা হয়ে তাঁর হৃদয়ে বিস্তার • ঘটিয়েছে এক নান্দনিক উজ্জ্বল প্রেনের তা বোধকরি নিঃসঙ্কোচেই বলা যায়। এর পেছনে যে কারণটি কবি জীবনানন্দের কবিমানসে কাজ করেছে তা হলো, বুদ্ধির প্রাচুর্য নয়-অনুভূতির” গাঢ়তা। আবেশঘন অনুভূতির গাঢ়তাই তাঁর সমস্ত ইন্দ্রিয়গুলিকে হারমোনিয়ামের মতোন তাল ছন্দে ধ্বনিময় করে বাজিয়ে এক অবোধ শিশুর মতোন প্রকৃতিসুন্দরীর রূপ-বন্দনায় গানের মতোন গেঁথে তুলেছেন বাংলাদেশের স্বচ্ছ জটিলতাহীন বেদনার-রসে ভেজা পরম তৃপ্তির আনন্দময় প্রেমমূর্তিটি।

এ কারণেই অনুভবের ভেতর থেকে নির্মাণ লাভ করার জন্যই তাঁর ভাষা বড় স্নিগ্ধময় ও চিত্ররূপময়। বেশ কটি সুন্দর সুন্দর চিত্রকল্প এই কবিতাটিতে গানের উজ্জ্বল অক্ষরের মতোন উঠে এসেছে, যা শুধু পাঠকের মনকে মোহিতই করে তোলে না. এক আশ্চর্যসুন্দরের রূপবিভায় রাঙিয়ে তোলে। যেমন দু-একটি-

১. খইয়ের ধান ছড়াতেছে শিশু এক উঠোনের ঘাসে

২. রাঙা মেঘ সাঁতরায়ে ‘অন্ধকারে আসিতেছে নীড়ে

ইমপ্রেশনিস্ট কবিদের মতোন রঙের ব্যবহারও এই কবিতাটির মধ্যে নজর কাড়ে। যা কবিতাটিকে সংকেতধর্মীতায় বেশ রসময় ও রূপময় করে তুলেছে।

Rajib Kumar
Rajib Kumarhttps://aajkalbangla.com/
নমস্কার। আমি ব্লগ লিখতে খুব ভালবাসি, বলতে পারেন শখ। আমি অর্থনীতি, বিভিন্ন কাজের খবর, ব্যবসা ইত্যাদি বিষয়ে লিখতে পছন্দ করি।
রিলেটেড পোষ্ট

খুব জনপ্রিয়