এস্তাদিও হোসে জোররিয়ালা, ভায়াদলিদ
তারিখ: ৩ মে ২০২৫
প্রতিযোগিতা: লা লিগা ২০২৪-২৫, ম্যাচডে ৩৪
লা লিগার শিরোপা লড়াইয়ে নিজেদের অবস্থান আরও মজবুত করলো এফসি বার্সেলোনা। এক গোলে পিছিয়ে পড়েও রিয়াল ভায়াদলিদের মাঠে ২-১ ব্যবধানে দুর্দান্ত এক প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে জয় ছিনিয়ে নেয় কাতালানরা। গুরুত্বপূর্ণ এই জয়ে বার্সা এখনো শিরোপার রেসে রয়েছে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে, এবং সামনে অপেক্ষা করছে মৌসুমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ—এল ক্লাসিকো!
ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলো
⚽ ৬ মিনিট – গোল: ভায়াদলিদ ১-০ বার্সেলোনা (ইভান সানচেজ):
ম্যাচের সূচনা থেকেই চমকে দেয় স্বাগতিকরা। ডান দিক থেকে কাট-ইন করে নেওয়া সানচেজের শটটি আরাউজোর গায়ে লেগে দিক পরিবর্তন করে, গোলরক্ষক টার স্টেগেনকে পরাস্ত করে জালে জড়ায়।
🔄 ৩৮ মিনিট – ইনজুরি: দানি রদ্রিগেজ (বার্সেলোনা):
সিনিয়র দলে অভিষেক ম্যাচেই বড় দুঃসংবাদ পেল তরুণ দানি রদ্রিগেজ। প্রতিপক্ষের চাপ সামলাতে গিয়ে কাঁধে আঘাত পান তিনি। ধারণা করা হচ্ছে কাঁধে ডিসলোকেশন হয়েছে। তৎক্ষণাৎ তাকে মাঠ ছাড়াতে হয় এবং বদলি হিসেবে নামেন ১৬ বছর বয়সী লামিন ইয়ামাল।
⏱️ হাফটাইম: ভায়াদলিদ ১-০ বার্সেলোনা
প্রথমার্ধে বার্সা ছিল অনেকটাই নিষ্প্রভ। মাঝমাঠে ছিল অস্থিরতা, আক্রমণে lacked creativity. বিরতির আগে গোল শোধের প্রচেষ্টা থাকলেও ফল মেলেনি। দৃষ্টান্তমূলক কিছু করার জন্য দ্বিতীয়ার্ধে প্রয়োজন ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন মানসিকতা।
দ্বিতীয়ার্ধে বার্সার প্রত্যাবর্তন
⏱️ দ্বিতীয়ার্ধের শুরু
বিশ্বাসযোগ্যভাবেই, হাফটাইমে কোচ জাভির বক্তৃতা দলকে প্রাণ ফিরিয়ে দেয়। দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামে এক অন্যরকম বার্সেলোনা। মাটি থেকে উঠে দাঁড়ায়, গতি বাড়ায়, ও পজিশনাল ফুটবলে ফেরে নিয়ন্ত্রণ।
⚽ ৫৪ মিনিট – গোল: ভায়াদলিদ ১-১ বার্সেলোনা (রাফিনহা):
বার্সার সমতা ফেরানো গোলটি আসে লামিন ইয়ামালের ক্রস থেকে। গোলরক্ষক আন্দ্রে ফেরেইরার ভুল ক্লিয়ারেন্স রাফিনহার পায়ে জমা হয়, যিনি নিখুঁতভাবে বল জালে জড়ান।
⚽ ৬০ মিনিট – গোল: ভায়াদলিদ ১-২ বার্সেলোনা (ফারমিন লোপেজ):
মাত্র ছয় মিনিটের ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করে ফেলে কাতালানরা। বাম দিক থেকে জেরার্দ মার্টিনের নিখুঁত গ্রাউন্ড পাস ফারমিন লোপেজকে খুঁজে পায়, যিনি বলটি দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণ করে বাঁ পায়ে শট নিয়ে গোল করেন।
দায়িত্বশীল গেম ম্যানেজমেন্ট এবং জয় নিশ্চিতকরণ
দ্বিতীয় গোলের পর থেকেই বার্সেলোনা ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে নেয়। জাভি একে একে মাঠে নামান দাজং, ফেরান, কিউবারসি সহ আরও অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের। প্রতিপক্ষের চাপে না পড়ে, বল দখল করে রেখে, ধীরগতির খেলায় ভায়াদলিদের আক্রমণকে সহজেই প্রতিহত করে বার্সা।
ভায়াদলিদ কিছুটা চেষ্টা চালায় শেষ দিকে, কিন্তু গোলরক্ষক টার স্টেগেনকে খুব একটা পরীক্ষা দিতে পারেনি তারা।
বার্সা লাইনআপ (৪-২-৩-১):রিয়াল ভায়াদলিদ বনাম এফসি বার্সেলোনা
শুরু একাদশ: টার স্টেগেন; ফোর্ট, আরাউজো, ক্রিস্টেনসেন, মার্টিন; গাভি, পেদ্রি; রদ্রিগেজ, ফারমিন, ফাতি; ভিক্টর
বদলি বেঞ্চ: পেনা, শেজনি, কিউবারসি, ইনিজিও, এরিক, ফারে, দে জং, দারভিচ, ওলমো, রাফিনহা, ইয়ামাল, ফেরান
ভায়াদলিদ লাইনআপ (৪-১-৪-১):
শুরু একাদশ: ফেরেইরা; কান্দেলা, কেমার্ট, ওজকাচার, আজনৌ; জুরিচ; আনুয়ার, সানচেজ, আমাল্লাহ, মোরো; সিল্লা
পরিসংখ্যান ও ম্যাচের সারাংশ
- গোল:
- ৬’ সানচেজ (ভায়াদলিদ)
- ৫৪’ রাফিনহা (বার্সেলোনা)
- ৬০’ ফারমিন লোপেজ (বার্সেলোনা)
- ম্যান অফ দ্য ম্যাচ: ফারমিন লোপেজ – জয়সূচক গোল + দারুণ পারফরম্যান্স
- রেফারি: আলেহান্দ্রো মুনিজ রুইজ
- VAR: দানিয়েল ত্রুজিয়ো সুয়ারেজ
এই জয়টা নিছকই তিন পয়েন্ট নয় — এটি এক আত্মবিশ্বাসের বার্তা। দলটি পিছিয়ে পড়েও ফিরে আসতে জানে, তরুণরা এগিয়ে এসে পার্থক্য গড়ে দেয়, আর এই একতা ও মানসিকতাই বার্সাকে শিরোপার দাবিদার করে তোলে।
আগামী সপ্তাহে বার্নাব্যুতে এল ক্লাসিকো — সেই ম্যাচ হয়তো শিরোপার ভাগ্য নির্ধারণ করবে। তবে এই জয়ের মাধ্যমে বার্সা সেই মহারণে আত্মবিশ্বাস নিয়ে যাবে।